রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শিবলী কায়সারকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে। শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে সদর দফতর থেকে এ সংক্রান্ত একটি স্মারক জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শিবলী বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আগামীকাল রোববার (১৬ মার্চ) পুলিশ সদর দফতরে রিপোর্ট করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১১ মার্চ পুলিশ কর্মকর্তা শিবলী কায়সার এবং ব্যবসায়ী অমিত বণিকের বিরুদ্ধে চাঁদার বিনিময়ে হত্যাচেষ্টা মামলার থেকে আওয়ামী লীগ নেত্রী লিপি খানের নাম বাদ দেয়ার বিষয়ে একটি অভিযোগ আসে। অভিযোগে একটি অডিও ক্লিপ সংযুক্ত করা হয়। সেখানে ব্যবসায়ী অমিত বণিক ও লিপি খানের কথোপকথন শোনা যায়। অমিত বণিককে বলতে শোনা যায় উপ-পুলিশ কমিশনার শিবলী কায়সারকে ১০ লাখ টাকা দিলে লিপি খানের নামে মামলা থাকবে না।
সূত্র আরও জানায়, পরে ১৩ মার্চ এ ঘটনায় আসামি লিপি খানের ম্যানেজার পলাশ খান কোতয়ালী থানায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীর অমিতের নামে চাঁদাবাজির মামলার করতে যায়। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা পলাশকে গুলির চেষ্টা ও নিজের নাম বাদ দিতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শিবলী কায়সারের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি এবং সদর দফতরে গোপন প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
তদন্ত সূত্রগুলো জানায়, শিবলী কায়সারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে হেডকোয়ার্টার্সে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৩মার্চ) বিকেলে শিবলী কায়সারকে উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) থেকে বদলি করে উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) পদে সংযুক্ত করা হয়।
তদন্ত সূত্রগুলো আরও জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিএনপি, জামায়াত এবং শিক্ষার্থীদের নামে হওয়া মামলাগুলো ফাইনাল রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দিলেও ওই কর্মকর্তা তা না দিয়ে কালক্ষেপণ করেন। সেই সময়কার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বার বার তাকে বললেও তিনি অপেশাদার আচরণ করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী জানান, থানার ঘটনার সাধারণ ডায়েরি হেডকোয়ার্টার্সে পাঠানো হয়েছে। এরপর তাকে হেড কোয়ার্টার্সে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি সদর দফতর বলতে পারবে।
তিনি আরও জানান, লিপি খানকে গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলা ছাড়াও নিজের নাম মামলা থেকে বাদ দিতে অর্থ লেনদেনের যোগসাজেশের অভিযোগ রয়েছে।