হাইকোটের রায়ের পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
দুপুর পৌনে ১ টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সম্মেলন কক্ষে ইন্টার্ন ও জৈষ্ঠ চিকিৎসকরা যৌথ সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এই কমপ্লিট শাটডাউন প্রত্যাহার করেন।
ফলে সকল ধরনের চিকিৎসা সেবা চালু হয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এতে ভোগান্তি কমতে শুরু করেছে দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনদের।
এছাড়াও প্রাইভেট চেম্বার গুলোতে বিকেল থেকে রোগী দেখা শুরু করবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
সংবাদ সম্মেলনে ডাঃ মোঃ মনোয়ার তারিক সাবু জানান, এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া নামের আগে কেউ ‘ডাক্তার’ পদবি লিখতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই রায়ের মধ্য দিয়ে চিকিৎসকদের বিজয় হয়েছে।
তবে দ্রুত গেজেট প্রকাশের দাবি করেছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা।
এর আগে এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না- এমন দাবি তুলে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের দাবিতে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা।
শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং চিকিৎসক পেশাজীবীদের ১৭ সংগঠন নিয়ে ‘সর্বস্তরের চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে এ ঐক্য গড়ে তোলা হয়েছে। এর অধীনে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন আর ইন্টার্নরা প্রতিদিন তিন ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেছেন।
উল্লেখ্য, চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি
১. এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না। আদালতে চলমান এ সংক্রান্ত আইন ও জনস্বাস্থ্য বিরোধী সব রিট আবেদন আগামী ১২ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং বাংলাদেশে ‘ডিপ্লোমা চিকিৎসক’ নামে বিভ্রান্তিকর কোনো পদবির প্রচলন করা যাবে না, যার অস্তিত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা বিশ্বের কোথাও নেই।
২. ‘রেজিস্টার্ড চিকিৎসক (এমবিবিএস /বিডিএস) ছাড়া অন্য কেউ স্বাধীনভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না’ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৩. আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্স কারিকুলাম সংস্কার কমিটি গঠন করে তাদের কোর্স কারিকুলাম পুনর্নির্ধারণ এবং মানহীন সকল ম্যাটস (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বন্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
৪. জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের জন্য শূন্যপদে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ এবং চিকিৎসকদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছরে উন্নীত করতে হবে।
৫. অবিলম্বে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো (পে-স্কেল) তৈরি করতে হবে।