শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে চাকরি স্থায়ীকরণ, সংস্কার, নারী নিপীড়ন ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদসহ নানা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশ হচ্ছে। এ স্থানে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন দাবিদাওয়া ও সমাবেশের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে।
এমনকি রমজান মাসেও সকাল-সন্ধ্যা চলছে নানা আন্দোলন ও প্রতিবাদ সমাবেশ। যেন দাবির মেলায় পরিণত হয়েছে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তাটি। এ কারণে দিনের অধিকাংশ সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে এই পথে। প্রতিদিন প্রেসক্লাবের সামনের এই রাস্তা দিয়ে যারা চলাচল করেন তারা শোনালেন ভোগান্তির কথা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নারী সেলের ব্যানারে মাগুরার শিশুসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশু নির্যাতন, হেনস্তা, ধর্ষণ এবং হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। এর পাশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, নিপীড়ন এবং ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন নাট্য নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সদস্যরা।
এর পাশেই সব ধর্ষণের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, ডিজিটাল মিডিয়ায় কর্মরতরা। জাতীয় প্রেসক্লাবের মূল গেটের সামনে বেসরকারি প্রাথমিক বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে টানা ২৫ দিন ধরে আন্দোলন করছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষকরা। তারা বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসব সংগঠনের অবস্থানের কারণে সড়কের দুই পাশেই যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এই রুট দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। অনেককে এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মতিঝিলের এক ব্যাংকারের ভাষ্য, ‘এরা ১৫ বছর কোথায় ছিলেন। কেউ কোনো দাবি জানাননি। এখন সুযোগ পেয়ে যে যার মতো রাস্তা বন্ধ করে দাবি জানাচ্ছেন। রমজান মাসেও এদের দাবিদাওয়া চাওয়া বন্ধ হচ্ছে না। আমার এই গরমের মধ্যে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে অফিস করতে হচ্ছে কেন রে ভাই? আমরাও এই দেশের নাগরিক। এখন সরকারের উচিত সড়ক খালি করে সাধারণ মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করা এবং রমজান মাসে সব ধরনের আন্দোলন ও সমাবেশ বন্ধ করে দেওয়া।’
আরেকজন পথচারী বলেন, দাবি আদায় বা সভা-সমাবেশের কারণে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পড়েন সে বিষয়টিও মাথায় রাখা দরকার। সরকার এবং জাতীয় প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষও যেন এ বিষয়ে নজর দেয়।