মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৫ অপরাহ্ন
মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৫ অপরাহ্ন

বিনয়ী হলে মিলবে আল্লাহর সন্তুষ্টি

রিপোর্টার নাম / ৮৮ দেখেছেন
আপডেট সময় : শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪

ইসলাম ডেস্ক: মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার নির্দেশের সামনে যারা বিনীত হয়, আল্লাহর আনুগত্য করে। আল্লাহর কথা স্মরণ করলে তাদের অন্তর কেঁপে ওঠে।
আল্লাহ তাআলা তার ঈমানদার বান্দাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে কোরআনুল কারিমে বলেন, اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِيْنَ اِذَا ذُكِرَ اللهُ وَ جِلَتْ قُلُوْبُهُمْ وَ اِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ اٰيٰتُهٗ زَادَتْهُمْ اِيْمَانًا وَّ عَلٰي رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُوْنَ

অর্থ: ‘যারা ঈমানদার, তারা এমন যে, যখন আল্লাহর নাম নেওয়া হয় তখন ভীত হয়ে পড়ে তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা স্বীয় পরওয়ার দেগারের প্রতি ভরসা পোষণ করে’। (সূরা: আনফাল, আয়াত: ২)

রাব্বুল আলামিন আল্লাহর কাছে যারা থাকেন অর্থাৎ ফেরেশতারা, তারাও বিনয়ী। তাদের মধ্যে অহমিকা নেই। আল্লাহর নির্দেশে তারা মানুষের আদিপিতা আদম (আ.)-কে সম্মানসূচক সিজদা করেছিলেন। আল্লাহ তাদের ব্যাপারে বলেন, اِنَّ الَّذِيْنَ عِنْدَ رَبِّكَ لَا يَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَادَتِهٖ وَ يُسَبِّحُوْنَهٗ وَ لَهٗ يَسْجُدُوْنَ.

অর্থ: ‘যারা তোমার রবের সান্নিধ্যে রয়েছে তারা তার ইবাদত থেকে অহংকারে মুখ ফেরায় না। তারা তার তাসবিহ পাঠ করে, তাকেই সিজদা করে’। (সূরা: আরাফ, আয়াত: ২০৬)

যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাআলা তার সম্মান বৃদ্ধি করে দেন। মানুষের অন্তরে তার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রম সৃষ্টি করে দেন। আর যে অহংকার করে আল্লাহর তাআলা তাকে অপমানিত ও হেয় করেন।

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে তিনি তার মর্যাদা উঁচুতে তুলে দেন। (সহিহ মুসলিম: ৬৩৫৬)

ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রা.) একদিন মিম্বরে বক্তৃতা দিতে দাঁড়িয়ে বলেন, লোক সকল! আপনারা বিনয়ী হোন। আমি আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাআলা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। সে নিজেকে নিজে ছোট মনে করে কিন্তু মানুষের চোখে মহান ও সম্মানিত হয়। যে ব্যক্তি অহংকার করে, আল্লাহ তাআলা তাকে হেয় করে দেন। সে মানুষের দৃষ্টিতে হয় ছোট- অপাংক্তেয় এবং সে নিজেকে নিজে খুব বড় মনে করে। এমনকি সে শেষ পর্যন্ত মানুষের চোখে কুকুর ও শূকরের চেয়েও অধিক ঘৃণিত বলে বিবেচিত হয়। (বায়হাকি: ৮১৪০)

দয়ার নবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত বিনয়ী ছিলেন। আল্লাহর শ্রেষ্ঠ রাসূল (সা.) এবং মদিনা রাষ্ট্রের প্রধান হয়েও তিনি নিজের কাজ নিজে করতেন। ঘরের কাজে স্ত্রীদের সাহায্য করতেন। স্ত্রী, সন্তান ও কর্মচারীদের প্রতি অত্যন্ত সদয় ছিলেন তিনি।

নবীজি (সা.) এর সহধর্মিণী আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তার কোনো স্ত্রী বা কর্মচারীর ওপর কখনো হাত ওঠাননি। আল্লাহর পথে জিহাদ ছাড়া তিনি কারো ওপরই হাত ওঠাননি। যে তার ক্ষতি করেছে, তার থেকেও প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। (সহিহ মুসলিম)

আয়েশা (রা.) আরো বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কোনো রকম অশোভনীয় কথা বলতেন না। বাজারেও তিনি উচ্চৈস্বরে কথা বলতেন না। মন্দ আচরণের বদলায় তিনি মন্দ আচরণ করতেন না; বরং ক্ষমা করে দিতেন। তারপর কখনো তা উল্লেখও করতেন করতেন না। (শামায়েলে তিরমিজি)

ইয়া আল্লাহ! রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে অনুসরণ করে আমাদের কর্তব্য বিনয়ী ও নম্র হওয়া এবং অহংকার ত্যাগ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সুত্র- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরোও দেখুন