বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৩ পূর্বাহ্ন
বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সংবাদ প্রকাশের জেরে মিথ্যা মামলা, প্রতিবাদে মানববন্ধন, দূর্নীতিবাজদের প্রত্যাহারের দাবি ঘাতকের দেয়া তথ্যে অটো চালকের লাশ উদ্ধার শিবগঞ্জ পৌরসভার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রাখতে ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা রাজশাহীতে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মানববন্ধন, ইজরাইলের বিরুদ্ধে। রাজশাহীতে আট তলা ছাঁদ থেকে পড়ে এক নারীর মৃত্যু চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রবাসী বন্ধুকে নিজেদের ব্যাংক হিসাব নম্বরসহ চেকবই দিয়ে ফেঁসে গেছে ৮যুবক অতিরিক্ত ভাড়া রুখতে বাস কাউন্টারগুলোতে বিআরটিএ সতর্কবার্তা চাঁপাইনবাবগঞ্জে রক্তদাতাদের বার্ষিক মিলনমেলা ও কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ‘রাজশাহীতে ঈদে কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা নেই’ শিবগঞ্জে “সেবা সংস্কৃতিতে আমরা” এর উদ্যোগে ঈদ উপহার ও নগদ অর্থ বিতরণ।

বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে যাচ্ছেন ১১৬ বছরের অন্ধ মুয়াজ্জিন মো. আব্দুর রহমান মোল্লা।

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৪৩ দেখেছেন
আপডেট সময় : বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫

প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীণ পাকা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা পথচারী বা যানবাহনে চলাচলকারী যাত্রীদের হঠাৎ দাড়িয়ে দুচোঁখ মেলে দেখতে হবে, অন্ধ মুয়াজ্জিন মো. আব্দুর রহমান মোল্লার বাঁশ ও দড়ি বেয়ে রাস্তাপারাপার ও মসজিদে প্রবেশের দৃশ্য। ১১৬ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত যাচ্ছেন দড়ি ধরে।

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার নগর ইউনিয়নের বড়দেহা গ্রামে মো. আব্দুর রহমান মোল্লার বাড়ি। চোঁখের দৃষ্টি শক্তি না থাকলেও মনের দৃষ্টি কমেনি তাঁর। অন্ধ মুয়াজ্জিনের এমন মহৎ কার্যক্রমে খুশি পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী। পবিত্র রমজানেও প্রতিদিন সময় মত সেহরি খেয়ে রোজা রাখেন।

স্থানীয়রা জানায়, ‘২১ বছর ধরে আব্দুর রহমান অন্ধ। পরিবারে রয়েছে দুই স্ত্রী ও ২৫ জন ছেলে-মেয়ে। তাদের মধ্যে ছয়জন মারা গেছেন। বর্তমানে ১০ জন মেয়ে ও ৯ জন ছেলে ও দুই স্ত্রী বেঁচে আছেন। অন্ধ হওয়ার পরে বড় ছেলেকে নিয়ে ২০১১ সালে পবিত্র হজ পালন করেছেন তিনি। হজ করে আসার পর নিজ এলাকা বড়দেহা গ্রামে নিজের পাঁচ শতাংশ জমির ওপর তৈরি করেন একটি পাকা মসজিদ। মসজিদের নামেই তিনি জমিটি রেজিস্ট্রি করে দেন। গ্রামের মানুষ ও ছেলে-নাতীদের নিয়ে ২০১১ সাল থেকেই নিজের স্থাপন করা মসজিদে নামাজ আদায় শুরু করেন। সেই মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবেও তিনি বিনাপারিশ্রমিকে দায়িত্ব পালন করছেন।

 

আব্দুর রহমান মোল্লার ছেলে আলহাজ মো. শফিকুল ইসলাম সাইফুল বলেন, ‘২১ বছর আগে একটি দুর্ঘটনায় বাবা অন্ধ হয়ে যায়। বাবার পরামর্শ অনুযায়ী বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত বাঁশ ও দড়ি টেনে দেওয়া হয়। প্রথমে প্রায় ১৫ দিন ছেলে ও নাতিরা বাঁশ ও দড়ি দেখিয়ে দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন। যাতায়াত ও রাস্তাপারাপার হওয়ার বিষয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।

ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাবার বয়স চলছে ১১৬ বছর। এই বয়সে এসেও অন্ধ হয়ে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আযান দেন। নামাজ আদায় করেন।’

নাতী মো. নাইম হোসাইন জানান, দাদার এমন মহতী কাজে উৎসাহী হয়ে সে নিজেও এখন মসজিদে যাওয়া শুরু করেছে। পড়াশোনার পাশাপাশি এখন নামাজে সময় দিচ্ছে।

মো. আব্দুর রহমান মোল্লা জানান, মহান আল্লাহ পাক তাকে এখনও অনেক সুস্থ্য স্বাভাবিক রেখেছেন। কেটে গেছে ১১৬ বছর বয়স। দুর্ঘটনায় অন্ধ হয়ে গিয়েও তিনি নিজের মনোবল শক্ত রেখেছেন। নিজের স্থাপন করা মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

নাটোরের খামারনাচকৈড় হাফেজিয়া মাদরাসার মুফতি হাফেজ মাওলানা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য আজান দিতেন। আর তিনি ছিলেন অন্ধ। আব্দুর রহমান মোল্লা ১১৬ বছর বয়সে এসেও ইসলামের পথে যে মহতি কাজ করছে তার প্রতি মহান আল্লাহ পাক অবশ্যই সদয় হবেন। তার মনোবল অনেক দৃঢ়।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরোও দেখুন