শার্মিন ও মুনমুনের কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করেছেন প্রতিষ্ঠানটির একাধিক সূত্র । বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজে গত কয়েক বছরে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও দুর্নীতির তীব্র অভিযোগ আবার জাগরণ করেছে। প্রাক্তন শিক্ষক, কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্র ও ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রজু আহমেদের দেওয়া বিস্তারিত বিবরণে অভিযোগ করা হয়েছে । কিভাবে প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতার পিছনে লুকিয়ে থাকা ব্যক্তিরা স্বার্থসিদ্ধির জন্য সহিংসতা, মামলা ও দুর্নীতির নানান কৌশল অবলম্বন করেছে।
মুনমুন মোস্তফা ও তার খারাপ সম্পর্ক অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ডাক্তার মুনমুন মোস্তফা ৫ই আগস্টের পূর্ব থেকেই আব্দুর রাজ্জাকের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন। তাঁর এক ধরনের বাজে সম্পর্ক ও রাত জেগে ফুলসজ্জা কাটানোর ঘটনা অভিযুক্ত করা হয়েছে। রজু আহমেদ বলেন মুনমুন সন্ত্রাসী ভাড়া নিয়ে কাজ করতেন প্রথমেই কাজটি শুরু করে কাজী মাজহারুল ইসলাম দোলনকে মারার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু মারতে না পেরে মামলা দেন।
গত ২০১৭ সালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের সন্তানদের দ্বারা কলেজের ট্রাস্টি বোর্ডের পদ দখল করা হয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পথে গড়িয়ে পড়ে ও শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও কর্মচারীদের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি হয়। ৫ই আগস্টে পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত ঘটনাবলীর মধ্যে, শার্মিন ইয়াসমিন (কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান) এবং তার স্বামী, সার্জারি বিভাগের প্রধান সহ কয়েকজন অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তারা মিলিতভাবে এসএমএস ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজে না আসার নির্দেশ দেন। এর ফলস্বরূপ, একটি শিক্ষকের দাঁত ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং পরে শ্লীলতা হানির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। গোয়েন্দা সুত্রে জানাগেছে, মুনমুন তার রুপের জ্বালে ফাঁসিয়ে কাবু রাখতেন আওয়ামিলীগের আব্দুর রাজ্জাক সহ হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেতাদের, বর্তমানে তিনি ক্ষমতা আর চেয়ার দখলে আরও ভয়ানক পথ বেছে নিয়েছেন।
শৃঙ্খলা ও পদোন্নতি কেলেঙ্কারির অভিযোগে আরও প্রকাশ পায়, ৫ই আগস্ট সকালে বহির্বিভাগ প্রদক্ষিণের সময় রজু আহমেদ কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগে গিয়ে মুনমুনকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেন আমার বিরুদ্ধে তোর অভিযোগ কি? সেই মুহূর্তে, মুনমুন অভিযোগের কোনো স্পষ্টতা দিতে ব্যর্থ হন এবং রাতেই তাঁর নামে শ্লীলতা হানির মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগ রয়েছে যে, মুনমুন ও শার্মিন ইয়াসমিনের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী কলেজে দুর্নীতি ও অভ্যন্তরীণ ক্ষমতাবাদের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রাক্তন শিক্ষকের বেদনা ও প্রত্যাশার এক বিবৃতিতে স্পষ্ট হয়েছে, তাঁর পেশাগত রাজনীতি ও জীবনের সংগ্রাম সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণে আসক্ত কিছু ব্যক্তির কারণে কলেজের মান ও স্বচ্ছতার ব্যাপারে গুরুতর প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তিনি আশাবাদী যে, এই কেলেঙ্কারিপূর্ণ রাজনীতি ও দুর্নীতি ভবিষ্যতে পরিবর্তিত হবে এবং সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি আবার একটি স্বচ্ছ, উন্নয়নশীল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
এইসব অভিযোগের বিষয়ে ডাঃ মুনমুন মোস্তফার চেম্বারে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি, অন্য সহকর্মীকে জিজ্ঞাসা করলে বলেন তারা বেশ কিছুদিন চেম্বারে আসেন না। বাহিরে থেকে আওয়ামী দোসরদেরকে নিয়ে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন ৷
এই বিষয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে তারাও তাদের এই কার্য কলাপ থেকে প্রতিকার চান এবং তাদের বিষয়ে বিব্রত হোন ৷